বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত” বাগেরহাটের বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আগামী ২৫-২৬ সেশনের কমিটি ঘোষণা ও আমীরের শপথ সাংবাদিক কামরুজ্জামান শিমুলকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে বাগেরহাটে মানববন্ধন বাগেরহাটে যুবকদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা বাগেরহাটে যুবদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোঃসুজন মোল্লার নেতৃত্বে আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ বাগেরহাটে সাংবাদিক শিমুলকে হত্যার হুমকি, ফেসবুকে নিন্দা’র ঝড় ৭৪ বছরে মোংলা বন্দর: সম্ভাবনার নতুন দুয়ার  শীতের শুরুতেই বাগেরহাটে আশা’র কম্বল বিতরণ বাগেরহাটে প্রদর্শিত  হলো নাটক “আর কতবার”
সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে

৭৪ বছরে মোংলা বন্দর: সম্ভাবনার নতুন দুয়ার 

রিপোর্টারের নাম / ৯ টাইম ভিউ
আপডেট: রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৪

বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা আজ তার ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পা রাখলো। দীর্ঘ সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও বন্দরটি দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। উন্নত নৌ, সড়ক ও রেলপথ অবকাঠামোর সুবাদে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পণ্য পরিবহন যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল এবং ভুটানের জন্য মোংলা বন্দর একটি কৌশলগত ও সম্ভাবনাময় বিকল্প হয়ে উঠেছে।

৭৪ বছরের ঐতিহ্য

মোংলা বন্দরের যাত্রা শুরু হয় ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর খুলনা জেলার চালনা এলাকায়। তবে ভৌগোলিক কারণে ১৯৫৩ সালে কার্যক্রম স্থানান্তরিত হয় বাগেরহাটের মোংলায়। প্রথম ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজ ‘দ্য সিটি অব লিয়ন্স’ সুন্দরবনের পশুর নদীর জয়মনির ঘোল এলাকায় নোঙর করে বন্দরের কার্যক্রম সূচনা করে।

১৯৭৭ সালে ‘চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ’ নামে এটি একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে নামকরণ করা হয় ‘মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ’। প্রতিষ্ঠার পর নৌপথের নাব্যতা সংকট অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। ১৯৮০ সালের পর থেকে দীর্ঘমেয়াদি ড্রেজিং কার্যক্রম চালিয়ে বন্দরটির কার্যক্রম

 পুনরুজ্জীবিত করা হয়।

উন্নয়নের ধারাবাহিকতা

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোংলা বন্দর অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নেয়া হয়েছে একাধিক মেগা প্রকল্প। বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান জানিয়েছেন, পশুর চ্যানেলের ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ হলে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে।

বর্তমানে বন্দরের জেটি, মুরিং বয়া, এবং অ্যাংকোরেজে একসঙ্গে ৪৭টি জাহাজ নোঙরের সুযোগ রয়েছে। বন্দর চ্যানেলে নেভিগেশন সুবিধার জন্য ৬৯টি বয়া স্থাপন করা হয়েছে। কনটেইনার হ্যান্ডলিং, রেফার প্লাগ পয়েন্ট, কার পার্কিং, এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন বন্দরের সক্ষমতাকে বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে।

অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সাফল্য

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন ২.৩০%, কার্গো পরিবহন ৯.৭২%, এবং কনটেইনার পরিবহন ১৬.৭৮% বেড়েছে। এছাড়া গাড়ি আমদানিতে ১৩% প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই বন্দর দিয়ে বছরে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টন কার্গো এবং ৪ লাখ টিইইউজ (কনটেইনার) হ্যান্ডলিং করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

উৎসবমুখর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রাত ১২টা ১ মিনিটে বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি সব জাহাজ থেকে এক মিনিট বিরতিহীন হুইসেল বাজানো হবে। কালকের দিনটি শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, এবং সেরা কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে উদযাপন করা হবে।

সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

মোংলা বন্দর বর্তমানে শুধুমাত্র বাংলাদেশের নয়, বরং আঞ্চলিক বাণিজ্যের একটি কেন্দ্রীয় হাব হয়ে উঠছে। পদ্মা সেতুর সংযোগ এবং উন্নত অবকাঠামো এই বন্দরের বাণিজ্যিক গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বন্দরের বর্তমান অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত করছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর