শুদ্ধাচার চর্চায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে খালিয়াজুরির ইউএনওই জেলায় শ্রেষ্ঠ
মোঃ রেজুয়ান খান নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধিঃ শুদ্ধাচার চর্চার মাধ্যমে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে অসামান্য অবদান স্বরূপ সরকারী কর্মকর্তাদের পুরস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করছে বর্তমান সরকার। কর্মদক্ষতা, শৃংখলা, সততা ও নৈতিকতার মাধ্যমে “ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ” এ পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের যোগ্যতা যাচাই ও কর্মদক্ষতা সৃষ্ঠির লক্ষ্যে সরকারের এ উদ্যোগ নি:সন্দেহে প্রশংশনীয়। নেত্রকোণা জেলায় ১০টি উপজেলার মধ্যে খালিয়াজুরি উপজেলার মানুষ চিরকাল অবহেলিত। এখানে বাতাস আর পানির সাথে যুদ্ধ করে মানুষের বেঁচে থাকা। বছরের ৬ মাস পানি আর ৬ মাস থাকে শুকনা। পানির মৌসুম যেন বিশাল জলরাশিতে ভেলার মত ভেসে থাকা জনপদ। শুকনা মৌসুমে ধানের চাষ, ভালো ফলন হলে মুখে হাসি নতুবা নিদারুন যন্ত্রনায় আরও একটি মৌসুমের জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকা ছাড়া আর কিছু নয়। এখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োজিত আছেন এএইচএম আরিফুল ইসলাম। তিনিই হাওরের মানুষের সাথে মিলে মিশে পানি-শুকনা দুই মৌসুমে মাঠ পর্যায়ে এমন কিছু করেছেন যার দৃষ্টি কেড়েছে উপজেলা থেকে জেলা তথা সমগ্র বাংলাদেশ। তিনি উপজেলার ৮৭৭টি ভূমিহীন পরিবারকে খাসজমি বন্দোবস্ত ও কবিলত হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রীর উপহার ৮৪৩ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ পাকা ঘর করে দেন। ১৪৫ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বেরী বাঁধের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করেন। কৃষকের ধান বিক্রিতে দাঁড়িপাল্লা তুলে দিয়ে ডিজিটাল মিটার চালু করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তাছাড়া শুকনো মৌসুমে তিনি মুক্ত হাওরে গবাদি পশু পালন, সবজি চাষের যে প্রথা তৈরি করছেন তাতে এলকাবাসী বিস্মিত হয়েছেন। নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজী মো: আবদুর রহমান জানান,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে তিনটি ক্যাটাগরিতে কর্মকর্তা/ কর্মচারিদেরকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম আরিফুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইক্রোবাইওলজিতে ২০০৯ সালে অনার্স ও সম্মান ডিগ্রি লাভ করেন। ৩১তম বিসিএস এ তিনি প্রশাসন ক্যাডারভূক্ত হয়ে ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারী হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনে যোগদান করেন। ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর তিনি নেত্রকোণা জেলা প্রশাসনে যোগদান করেন এবং খালিয়াজুরি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন করেন। খালীয়াজুরি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেব চৌধূরী বলেন, অত্যন্ত ভালো একজন ইউএনও পেয়েছেন তারা। একজন মানবিক মানুষকে ইউএনও হিসাবে পেয়ে তারা খুবই আনন্দিত। তাই তারা অনেক অভূতপূর্র্ব কাজের সম্পাদনা করতে পেরেছেন। তার যোগ্যতাস্বরূপ জেলায় তিনি শ্রেষ্ঠ ইউএনও হয়েছেন তাতে তারাও আনন্দিত। তারা কোন কালেই এরকম একজন মানুষকে ইউএনও হিসাবে পাননি। এলাকার মানুষের যেকোন ধরনের সমস্যা নিজে উদ্যোগী হয়ে সমাধানের চেষ্টা করেন। তিনি আরও জানান গ্রুপ ভিত্তিক কাজে তিনি খুবই দক্ষ একজন মানুষ।একসাথে ৮৪৩ টি ভূমিহীন পরিবারকে প্রধান মন্ত্রীর ঘর দিয়ে তিনি যে দৃষ্ঠান্ত সৃষ্টি করেছেন তা চিরকাল উদাহরণ হয়ে থাকবে। এএইচএম আরিফুল ইসলাম বলেন, খালিয়াজুরি উপজেলাটি হাওর বেস্টিত হলেও এ জায়গাটিতে কাজ করার মত অনেক জায়গা রয়েছে। তার কাজের অবদান স্বরূপ শুদ্ধাচার চর্চার মাধ্যমে জেলা প্রশাসন শ্রেষ্ঠ ইউএনও হিসাবে নির্বাচিত করায় তিনি খুবই আনন্দিত ও গর্ববোধ করছেন। উপজেলার সকল মানুষ তাকে সহযোগিতা করেছেন বলেই তার এ প্রাপ্তি। তিনি উপজেলার সকল মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ স্বীকার করেছেন। পাশা-পাশি মনোনীত বোর্ড জেলা প্রশাসন বিশেষ করে জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি তার কাজের ধারাকে অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন। অব্যাহত থাকুক এই প্রক্রিয়া। ভালো কাজের সম্মান থাকুক অটুট। প্রতিযোগিতা হোক কর্মের প্রতিযাগিতা হোক শুদ্ধাচারের। প্রতিযোগিতায় ঠিকে থাকতে কর্মকর্তাদের মধ্যে শুদ্ধ চর্চা হবে। এতে সমাজ ও রাষ্ট্র অনেক উপকৃত হবে।